প্রিয়ঙ্কার স্বামীর বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা ইডির

আর্থিক তছরুপের মামলায় শিল্পপতি তথা কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার স্বামী রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করল ইডি। সেই চার্জশিট থেকে এবার জানা গেল, ‘বেআইনি’ ভাবে ৫৮ কোটি টাকা আয় করেছিলেন রবার্ট। গত মাসের শেষে জমি সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতির মামলায় রবার্টের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। রবার্টের বিরুদ্ধে তহবিল তছরূপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-র একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিন থেকে সাত বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি অপরাধমূলক কাজের মাধ্যমে অর্জিত সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করাও হতে পারে। রবার্টের পাশাপাশি সত্যানন্দ ইয়াজি এবং কেওয়াল সিংহ ভিরকের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়েছে। এ ছাড়া, ইডি-র চার্জশিটে রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটি প্রাইভেট লিমিটেড, স্কাইলাইট রিয়েলটি প্রাইভেট লিমিটেড এবং ওঙ্কারেশ্বর প্রপার্টিস প্রাইভেট লিমিটেড (বর্তমানে এসজিওয়াই প্রোপার্টিস প্রাইভেট লিমিটেড)-সহ কয়েকটি সংস্থার নাম রয়েছে।২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটির কেনা একটি জমি নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। চার্জশিটের দাবি, জমি বিক্রির দলিল থেকে জানা গিয়েছে, ওঙ্কারেশ্বর প্রপার্টিসের কাছ থেকে ৭.৫ কোটি টাকায় ৩.৫ একর জমি কিনেছিল রবার্টের সংস্থা, যদিও ওই জমির আদতে দাম ছিল ১৫ কোটি টাকা। গোটা টাকার লেনদেন হয়েছিল চেকের মাধ্যমে। এ ভাবে প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকার শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছিল। পরে জমিটি ৫৮ কোটি টাকায় রিয়্যাল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ইডি-র আরও অভিযোগ, ওই জমির মিউটেশন প্রক্রিয়া মাত্র এক দিনেই সম্পন্ন হয়েছিল, যা শেষ হতে সাধারণত বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ৫৮ কোটি টাকার মধ্যে পাঁচ কোটি টাকা ব্লু ব্রিজ ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক সংস্থার মারফত পাঠানো হয়েছিল। বাকি ৫৩ কোটি টাকা পাঠানো হয়েছিল রবার্টের সংস্থাকে। অভিযোগ, এই তহবিল বিভিন্ন স্থাবর সম্পত্তি কেনা, বিনিয়োগ কিংবা ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। এ রকম প্রায় ৩৮কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা মূল্যের ৪৩টি স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি— যার মধ্যে রবার্টের বিকানেরের জমি, গুরুগ্রাম, মোহালি ও নয়ডার একাধিক অফিস এবং অহমদাবাদের একটি ফ্ল্যাটও রয়েছে। এর মধ্যে কিছু সম্পত্তি সরাসরি রবার্টের নামে নথিভুক্ত। বাকিগুলি রয়েছে তাঁরই সংস্থা স্কাইলাইট রিয়েলটি প্রাইভেট লিমিটেড, রিয়েল আর্থ এস্টেটস প্রাইভেট লিমিটেড এবং আর্টেক্স-এর নামে।এই মামলায় এর আগে একাধিক বার রবার্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। যদিও বার বারই সব অভিযোগ বিজেপির চক্রান্ত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রবার্ট। রবার্টের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করেছে কংগ্রেস শিবিরও।