🌍 NISAR: মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাহারাদার – NASA ও ISRO-র যুগলবন্দি মিশন

কল্পনা করুন, পৃথিবীর প্রতিটি নড়াচড়া, প্রতিটি পরিবর্তন – হোক সেটা গ্লেসিয়ার গলা, ভূমিধস, ভূমিকম্প বা বনের ধ্বংস — সবই যদি আমরা আগেভাগেই জানতে পারি! হ্যাঁ, এবার সেই দিশায় এক বিশাল পদক্ষেপ নিয়েছে NASA এবং ISRO একসঙ্গে। এটাই হচ্ছে NISAR, যার পুরো নাম – NASA-ISRO Synthetic Aperture Radar Mission।

🚀 NISAR কী?

NISAR হচ্ছে এক অভিনব আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের নানা রকমের নড়াচড়া এবং পরিবর্তনকে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে নজরদারি করতে পারবে। এই উপগ্রহটি L-band এবং S-band দুই ধরনের রাডার ব্যবহার করে পৃথিবীর ছবি তুলবে, এবং তা এতটাই স্পষ্ট হবে যে, একটি নারিকেল গাছও আলাদা করে ধরা পড়বে!

🤝 NASA এবং ISRO-এর ঐতিহাসিক সহযোগিতা

এটাই প্রথমবার, যখন NASA এবং ISRO এমন একটি জয়েন্ট মিশনে একসঙ্গে কাজ করছে, যা একইসঙ্গে বৈজ্ঞানিক এবং পরিবেশগত দিক থেকে বিশ্বের জন্য বিশাল গুরুত্বপূর্ণ।

• NASA তৈরি করেছে L-band রাডার সিস্টেম

• ISRO তৈরি করেছে S-band রাডার এবং উৎক্ষেপণ করবে GSLV রকেটে করে

এই মিশনের মাধ্যমে ভারত এবং আমেরিকা একসঙ্গে পৃথিবীর পরিবর্তনকে বুঝে ওঠার পথে এগোচ্ছে।

🌋 কেন এই মিশন এত গুরুত্বপূর্ণ?

আমরা যেসব জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কৃষি সমস্যা ইত্যাদির মুখোমুখি হচ্ছে, সেগুলোর গভীরে গিয়ে কারণ খুঁজে বের করতে NISAR এক অমূল্য হাতিয়ার হয়ে উঠবে।

✅ ভূমিকম্প বা ভূমিধস আগেই শনাক্ত করা যাবে
✅ বনাঞ্চল ধ্বংস বা গ্লেসিয়ার গলা নজরে আনা যাবে
✅ খরা বা বন্যা পরিস্থিতি বুঝে কৃষকদের সাহায্য করা যাবে

এক কথায়, পৃথিবীর শরীরের ভাষা বুঝবে NISAR!

📅 NISAR কবে মহাকাশে যাচ্ছে?

শনিবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, বিকেল ৫:৪০ PM IST‑এ, ISRO-এর GSLV‑F16, রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এরপর এটি পৃথিবীকে প্রতিদিন একাধিকবার স্ক্যান করবে এবং টেরাবাইটের পর টেরাবাইট তথ্য পাঠাবে আমাদের গবেষণাগারে।

🛰️ কিছু দারুণ তথ্য – আপনি জানেন কি?

• NISAR হবে বিশ্বের প্রথম দ্বৈত ফ্রিকোয়েন্সির রাডার স্যাটেলাইট

• এটি প্রতি ১২ দিনে পৃথিবীর প্রতিটি স্থানের মানচিত্র আপডেট করবে

• প্রতি সেকেন্ডে 240 কিমি পর্যন্ত এলাকা স্ক্যান করতে পারবে

• তথ্য গুলো উন্মুক্ত থাকবে গবেষকদের জন্য – খোলা ডেটা নীতি

বিজ্ঞান এখন আর শুধু গবেষণাগারে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আমাদের জীবনের অংশ হয়ে উঠছে। আর NISAR তার এক উজ্জ্বল প্রমাণ। NASA ও ISRO-র এই যুগলবন্দি যেন মহাকাশ থেকে পৃথিবীর এক নিরব পাহারাদার, যে শুধু দেখবে না — আমাদের বিপদ থেকে আগেও সাবধান করবে।

পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এক নিরাপদ পৃথিবী গড়ার স্বপ্নকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে NISAR।