কলকাতা শহরে অনুমোদনপ্রাপ্ত ও বেআইনি পার্কিং লট চেনাতে বিশেষ অ্যাপ আনার কথা ভাবছে পুরসভা

রাজকুমার সূত্রধর কলকাতা ঃ রাশ টানতেই পার্কিং ফি আদায়ের পরিমাণ গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কিছুটা হলেও বেড়েছে। তাতেও স্বস্তিতে নেই পার্কিং বিভাগের আধিকারিকদের। কারণ, পুরসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পার্কিং বাবদ ঘণ্টা পিছু ১০ টাকার বেশি আদায় করা বেআইনি। সেখানে শহরের একাধিক জায়গায় ১০ টাকার বদলে ২০ টাকা বা তারও বেশি নেওয়া হচ্ছে পার্কিং ফি’র নামে। তাই এবার এমন একটি সফটওয়্যার তৈরি করে বিশেষ ধরণের অ্যাপ আনার কথা ভাবা হয়েছে।
যার মাধ্যমে সকলে দেখতে পাবেন কোথায় কোথায় অনুমোদিত পার্কিং লট রয়েছে। কোথায় বেআইনি লট চলছে। শুধু তাই নয় কোথায় কত ভাড়া তাও অ্যাপে পাওয়া যাবে। পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের ঘরে এ নিয়ে বিশেষ বৈঠক হয় । সেখানে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে । পাশাপাশি শহরের যত্রতত্র এই বেআইনি পার্কিং এবং তা ঘিরে রমরমিয়ে চলা ব্যবসার প্রসঙ্গ ওঠে।
তাতে কলকাতা ট্রাফিক পুলিসের এক কর্তাও ছিলেন। পুরসভার তরফে প্রায় ৩০-৩৫ বেআইনি পার্কিং লটের নাম ট্রাফিক পুলিসের কর্তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এগুলি কোন কোন এলাকায় চলছে, সেগুলি নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে। পার্কিং বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, কলকাতা ট্রাফিক পুলিসের কর্তাকে মেয়র পারিষদ বলেছেন, দ্রুত এই বেআইনি পার্কিংগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারের কথায়, বেআইনি পার্কিং নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন । ট্রাফিক পুলিসকে বলা হয়েছে কড়া হতে। এব্যাপারে পুর প্রশাসন সবরকম সাহায্য করবে। পার্কিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তালিকায় রয়েছে , ক্যানাল ইস্ট রোড, ক্যানাল ওয়েস্ট রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, লেক মলের কাছে রাসবিহারি অ্যাভিনিউ, পরমহংস দেব রোড, গড়িয়াহাট রোড, রাজা রামমোহন রায় সরণী, আর এন মুখার্জি রোড,কিরণশঙ্কর রোড, জাস্টিস চন্দ্র মাধব রোড, আলিপুর রোড, চাঁদনি চক স্ট্রিট, কুপার স্ট্রিট, হরিশ মুখার্জি রোড, পণ্ডিতিয়া রোড, চক্রবেড়িয়া নর্থ, বেলতলা রোড, মাইসোর রোড, ডোভার লেন সহ একাধিক রাস্তা।
* পার্কিং বিভাগের এক কর্তা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট রাস্তাগুলির হয় গোটা অংশ অথবা আংশিক জায়গায় বেআইনি পার্কিং করে গাড়ি রাখা হচ্ছে। যার জেরে চরম যানজট হচ্ছে ওই এলাকায়। গত কয়েক বছরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাঙের ছাতার মতো পার্কিং লট গজিয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক কারণেই তা নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হচ্ছে না।পার্কিং বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, এই ধরনের অতিরিক্ত টাকা নেওয়া বেআইনি।
নাগরিকদেরও অতিরিক্ত টাকা দেওয়া উচিত নয়। এসব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তা আটকে গিয়েছে। তবে তিনি এও জানান, নতুন একটি অ্যাপ আনা হচ্ছে। যেখানে কোথায় অনুমোদনপ্রাপ্ত পার্কিং লট রয়েছে তা উল্লেখ করা থাকবে। সেই পার্কিং লটে দায়িত্বে থাকা কর্মীদের হাতে পার্কিং ফি হিসেবে নগদ দিতে হবে না। সংশ্লিষ্ট অ্যাপের মাধ্যমেই পার্কিং ফি দেওয়া যাবে। তাতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হবে না। দেবাশিস বাবু যাই বলুন এটা কি এত সহজে সকলে মেনে নেবে? এ প্রশ্ন অনেকের।
বিভাগীয় কর্তাদের মতে, আদায়কৃত টাকা আরও বৃদ্ধি পেত, যদি এই বেআইনি পার্কিং লট নিয়ন্ত্রণে আনা যেত। আধিকারিকদের কথায়, বেআইনি পার্কিং লটের বাড়বাড়ন্তের পিছনে রয়েছে শাসকদলের ‘দাদা’দের প্রত্যক্ষ মদত। যা তুলতে গেলে খোদ পুরভবনের উপরমহল থেকেই বাধা আসবে।*বর্তমানে কলকাতায় রয়েছে প্রায় ৭৫০ পার্কিং লট। যেখানে প্রায় প্রতিদিন গাড়ি পার্কিং ৫ হাজারের মত।